Last Updated:September 03, 2025 12:45 PM IST
Land Deal Trouble:বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে যে, সেখানকার থাল গ্রামে সুহানা একটি জমি কিনেছিলেন। তবে সেই জমিটি আসলে কেনা হয়েছিল কৃষিকাজের উদ্দেশ্যে।
রায়গড়: মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলায় জমি লেনদেনের ঘটনায় সম্প্রতি তদন্তের মুখে পড়েছেন বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের কন্যা অভিনেত্রী সুহানা খান। বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে যে, সেখানকার থাল গ্রামে সুহানা একটি জমি কিনেছিলেন। তবে সেই জমিটি আসলে কেনা হয়েছিল কৃষিকাজের উদ্দেশে।
সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই জমিটির মূল্য ছিল ১২.৯১ কোটি টাকা। মুম্বইয়ের কাফ প্যারেডের খোটে পরিবারের কাছ থেকে এই জমিটি কেনা হয়েছিল। গত ৩০ মে ২০২৩ তারিখে এই লেনদেন সম্পন্ন হয়েছিল। সেই সময় এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল ৭৭.৪৬ লক্ষ টাকার স্ট্যাম্প ডিউটি পেমেন্টও। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে যে, কৃষি জমি হস্তান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি এবং কাগজপত্র সঠিক ভাবে নেওয়া হয়েছিল কি না, সেই বিষয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এখন প্রশ্ন তুলছে। আপাতত এ নিয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে। আলিবাগ তহসিলদারকে একটি নিরপেক্ষ তথ্যাবলী জমা করতে বলা হয়েছে।
এই ঘটনাটির জেরে নতুন করে এক জোর চর্চা শুরু হয়েছে। আসলে ভারতে কৃষি জমির ক্রয় নিয়ন্ত্রণকারী নিয়মকানুন এবং কীভাবে কেউ আইনি ভাবে নিজেকে কৃষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এই ধরনের সম্পত্তি কিনতে পারেন, তা নিয়েই আলোচনা হচ্ছে।
আইনি ভাবে নিজেকে একজন কৃষক হিসেবে কীভাবে প্রতিষ্ঠা করা যাবে?
ভারতে কৃষকের অবস্থান সাধারণত কৃষি জমির মালিকানার মাধ্যমে যাচাই করা হয়। যা ৭/১২ এর উদ্ধৃতি অথবা তাঁর নামে থাকা অন্যান্য সরকারি জমির রেকর্ডের মতো রেকর্ডের মাধ্যমে নথিভুক্ত করা হয়। এর পাশাপাশি মানুষ কৃষক সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করা যেতে পারে। কখনও কখনও এই সার্টিফিকেটকে অবশ্য ক্ষুদ্র অথবা প্রান্তিক কৃষক সার্টিফিকেট বলেও অভিহিত করা হয়। আর এই সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করতে হবে স্থানীয় রাজস্ব অফিস অথবা সরকারি পোর্টাল থেকে। এরপরে পরিচয়পত্রের পরিমাণ এবং জমির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হবে। নির্দিষ্ট রাজ্যগুলি আবার ফর্ম্যাল সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে। যা কৃষকের স্টেটাসের অফিসিয়াল প্রমাণপত্র হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। পরবর্তীকালে কৃষি জমি কেনার যোগ্যতার প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার ক্ষেত্রে এই সার্টিফিকেটটিকে ব্যবহার করা যেতে পারে।
কৃষি জমি কেনার নিয়মাবলী:
ভারতে কৃষি জমি কেনার নিয়ম এক-একটা রাজ্যে এক-এক রকম হয়ে থাকে। এর যোগ্যতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কারও কৃষিকাজের ব্যাকগ্রাউন্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়। সাধারণ ভাবে শুধুমাত্র সেই সব মানুষরাই কৃষক বলে গণ্য হন, যাঁদের পরিবারের নিকট সদস্যরাও কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। ফলে তাঁরাই এই ধরনের জমি কেনার অনুমতি পেয়ে থাকেন। কিছু রাজ্যে আবার আরও বিধিনিষেধ যোগ করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম হল – শুধুমাত্র স্থানীয় বাসিন্দারাই এই জমি কিনতে পারবেন অথবা এমন জমি কেনার জন্য প্রয়োজন হবে নির্দিষ্ট সরকারি অনুমতির। এছাড়া এই ধরনের জমি ক্রয়ের যোগ্যতা সক্রিয় কৃষি কাজ প্রদর্শন অথবা কৃষিকাজের সঙ্গে সম্পর্কিত আয়ের মানদণ্ড পূরণের উপরেও নির্ভর করতে পারে। রাজ্যের নির্দিষ্ট নিয়মগুলিও কিন্তু ব্যাপক ভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে যে, তামিলনাড়ুতে কোনও রকম বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় না। অর্থাৎ যে কেউই কৃষিজমি কেনার অনুমতি পেয়ে যেতে পারে। তবে অন্যদিকে কর্নাটক, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাতের মতো রাজ্যগুলিতে কিন্তু এক্ষেত্রে আরও কঠোর শর্ত রয়েছে।
ভারতে কৃষি জমি কেনার জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র:
ভারতে কৃষি জমি কেনার সময় লেনদেন যে আইনি এবং স্বচ্ছ ভাবে করা হচ্ছে, সেটা নিশ্চিত করতে জরুরি কিছু নথি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন – টাইটেল ডিডের মাধ্যমে যাচাই করা হয় বিক্রেতার মালিকানা। আবার সেল এগ্রিমেন্টে উভয় পক্ষের দ্বারা সম্মত শর্তাবলীর রূপরেখা দেওয়া হয়ে থাকে। এরপর স্ট্যাম্প ডিউটি এবং রেজিস্ট্রেশন আইনত মালিকানা হস্তান্তরকে বৈধতা দেয় এবং রেকর্ডও রাখে। ট্যাক্স রিসিটের অর্থ হল, কোনও রকম আউটস্ট্যান্ডিং বাকি নেই। আর এনকামব্র্যান্স সার্টিফিকেট এটা নিশ্চিত করে যে, জমিটি নিয়ে কোনও রকম আইনি অথবা আর্থিক বিবাদ নেই।
সম্পত্তির আসল পরিমাপ এবং প্রযোজ্য হলে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নিকে ভেরিফাই করে ল্যান্ড মেজরমেন্ট সার্টিফিকেট। প্রসঙ্গত, পাওয়ার অফ অ্যাটর্নির ক্ষেত্রে সেলারের অনুপস্থিতিতে নির্ধারিত কেউ কাজটি করে থাকেন। আর এই সমস্ত নথিপত্র সাবধানে জোগাড় করে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা জরুরি। এটি ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়ের জন্যই রক্ষাকবচের মতো। আর জমি ক্রয়ও হয় মসৃণ এবং তাতে কোনও গোলমালও থাকে না।
কৃষি জমির ট্যাক্স বেনিফিট:
ভারতে কৃষিকাজ থেকে হওয়া আয় সাধারণত আয়কর থেকে মুক্ত হয়। নির্দিষ্ট মিউনিসিপ্যাল লিমিটের বাইরে গ্রামীণ কৃষি জমির উপর ক্যাপিটাল গেনও ট্যাক্স-ফ্রি বা করমুক্ত। আবার শহুরে কৃষি জমির ক্ষেত্রে দুই বছরের মধ্যে নতুন কৃষি জমিতে পুনঃবিনিয়োগ করা হলে ৫৪বি ধারার অধীনে ছাড় প্রযোজ্য হবে। এই ট্যাক্স বেনিফিটগুলি বজায় রাখার জন্য পুনঃবিনিয়োগের সময়সীমা এবং লক-ইন পিরিয়ড সম্পর্কিত শর্ত রয়েছে।
আবার শাহরুখ খানের কন্যা সুহানা খানের ঘটনাটিতে জমি হস্তান্তরের আগে সমস্ত নিয়ন্ত্রক পদ্ধতি সঠিক ভাবে মেনে চলা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করার উপর আইনি জোর দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কৃষি সম্পত্তি কেনার আগে এই নিয়মগুলি বোঝার গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে।
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
September 03, 2025 12:45 PM IST
Land Deal Trouble: জমি সংক্রান্ত চুক্তির জটে ফাঁসলেন শাহরুখ-কন্যা সুহানা! ভারতে আইনি ভাবে নিজেকে কৃষক প্রমাণ করার উপায় কী? আর কৃষি জমি কেনার নিয়মটাই বা কী? জানুন