রাজ্যে এসআইআর হবেই। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস আগে থেকে দাবি করে আসছিল, এই রাজ্যে এসআইআর করতে দেওয়া হবে না। তবে এখন কতকটা 'সুর বদল' করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই আবহে এবার ভারতের নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তাতে দাবি করা হয়েছে, এসআইআর-এ যেন পরিচয়পত্র হিসাবে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডকেও গ্রহণ করা হয়। (আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য বড় খবর, বকেয়া ডিএ মামলার অর্ডার কপি সামনে এল)
আরও পড়ুন: নেপালের মতো বাংলায় ঘণঅভ্যুত্থানের ডাক অর্জুনের, বড় পদক্ষেপের পথে তৃণমূল
উল্লেখ্য, সারা দেশে ভোটার তালিকা আরও নির্ভুল করার জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) 'বিহার মডেল' গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কমিশন বুধবার সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের (সিইও) সঙ্গে বৈঠক করে। প্রতিটি রাজ্যকেই তাদের আগের স্পেশাল ইনটেসিভ রিভিশন তালিকার সঙ্গে বর্তমান ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এই আবহে শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশেই হবে এসআইআর। এদিকে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, অক্টোবর থেকেই গোটা দেশে এই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। কমিশনের তরফ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রস্তুতি শেষ করতে হবে সব রাজ্যকে। (আরও পড়ুন: 'আর কবে?', নেপালের উল্লেখ করে বিস্ফোরক TMC বিধায়ক হুমায়ুন কবির)
বিহারে চলমান স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) চলাকালীন দেখা গেছে যে ৭.৮৯ কোটি নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি ভোটারের নাম প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ২০০৩ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে যুক্ত। প্রায় ৫২% ভোটারের নাম ২০০৩ সালের তালিকায় সরাসরি পাওয়া গিয়েছিল। প্রায় ২৫% ভোটারকে তাদের বাবা-মা বা পরিবারের সদস্যদের নামের মাধ্যমে তালিকার সাথে যুক্ত করা হয়। এই পরিসংখ্যান উপস্থাপন করে বিহারের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা বিনোদ সিং গুঞ্জিয়াল বলেছিলেন যে পরিবারের তালিকার সাহায্যে ২০০৩ সালের তালিকায় বিপুল সংখ্যক ভোটার যুক্ত হয়েছেন বিহারে। এখন বিহারের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হবে, তবে কমিশন এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি যে সারা দেশে কখন এসআইআর কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, কমিশন গত ২৪ জুন আদেশ দিয়ে জানিয়েছিল, ২০০৩ সালের পরে বিহারের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত সকলকে তাদের জন্ম তারিখ/জন্মস্থান প্রমাণ করে নথি জমা দিতে হবে। ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের পরে জন্মগ্রহণকারী ভোটারদেরও তাদের পিতামাতার নথি সরবরাহ করতে বলা হয়েছিল। এটা নাগরিকত্ব আইন, ১৯৬৫-র বিধানগুলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এদিকে বুধবারের বৈঠকে, কমিশনের তরফ থেকে রাজ্যগুলিকে জিজ্ঞাসা করা হয়, বিহারের আদেশে তালিকাভুক্ত ১১টি নথি ছাড়াও ভোটাররা আরও কী নথি উপস্থাপন করতে পারেন। বেশিরভাগ রাজ্যের কাছে অবশ্য এর কোনও সুস্পষ্ট জবাব ছিল না। কেউ কেউ আধার কার্ড এবং ভোটার আইডি কার্ড (ভোটারদের সচিত্র পরিচয়পত্র) প্রস্তাব করেছিলেন। অসমের মতো রাজ্যগুলি নির্দিষ্ট পরিচয়পত্রের পরামর্শ দিয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন গত ২৪ জুনের আদেশে আধার, ইপিআইসি এবং রেশন কার্ডকে অন্তর্ভুক্ত করেনি। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেও কমিশন তার আগের অবস্থান পরিবর্তন করেনি। কিন্তু এই সপ্তাহেই আদালত নির্দেশ দিয়েছে, বিহার এসআইআর-এর জন্য আধার গ্রহণ করা হোক।