উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ-র প্রার্থী সিপি রাধাকৃষ্ণণের জয়ের ব্যবধান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিরোধীদের মধ্যেই। এই আবহে ভারতীয় জনতা পার্টিকে তীব্র আক্রমণ করে তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) জাতীয় সাধারণ সম্পাদক বুধবার দাবি করেছেন যে বিজেপি ভোট কেনার জন্য প্রতি সাংসদ ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা খরচ করেছে। লোকসভায় তৃণমূলের সংসদীয় দলের নেতা অভিষেক অভিযোগ করেন, বিজেপি গণতন্ত্রকে দুর্বল করার জন্য অর্থের শক্তি ব্যবহার করছে। তিনি দাবি করেছিলেন যে বিজেপি নেতারা মঙ্গলবারের নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে 'বস্তা বস্তা অর্থ নিয়ে এসেছিলেন'।
দিল্লি থেকে ফেরার পর কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় অভিষেক বলেন, 'কিছু লোকের সঙ্গে কথা বলার পর আমি বলতে পারি যে বিজেপি ভোট কেনার জন্য প্রত্যেক সাংসদ পিছু ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা খরচ করেছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত সদস্যরা জনগণের আস্থা ও অনুভূতি বিক্রি করছেন। প্রতিনিধি কেনা যায়, কিন্তু মানুষ নয়।' তিনি দাবি করেছিলেন যে তৃণমূল কংগ্রেসের 41 জন সাংসদ (২৮ জন লোকসভা সদস্য এবং ১৩ জন রাজ্যসভার সদস্য) বিরোধী প্রার্থী বি সুদর্শন রেড্ডির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌগত রায় অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও ভোট দিয়েছেন।
এর আগে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ দাবি করেছিলেন যে ৩১৫ জন সাংসদ রেড্ডিকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই আবহে বিরোধী শিবিরে বিশ্বাসঘাতকতার দিকে ইঙ্গিত করে অভিষেক অভিযোগ করেন, "যেহেতু গোপন ব্যালটে ভোট হয়েছিল, তাই 'ক্রস ভোটিং' হয়েছিল নাকি বিরোধী সদস্যদের ভোট প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে তা বলা মুশকিল। আমি যদি ক্রস ভোটিংয়ের তত্ত্ব মেনে নিই, তাহলে বলতে পারি, আম আদমি পার্টির (এএপি) মতো কিছু দল রয়েছে, যাদের এক মহিলা সাংসদ প্রকাশ্যে বিজেপিকে সমর্থন করেন এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে কথা বলেন। এছাড়া আরও দুই-চারজন এমপি আছেন...' এরপর তিনি আরও বলেন, বিজেপি বারবার অর্থের অপব্যবহার করে দাঁড়িপাল্লা তাদের পক্ষে ঝুঁকিয়েছে। ২০২১ সালের বাংলা বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপি রাজ্যে প্রচুর পরিমাণে নগদ আনার চেষ্টা করেছিল এবং তাতে ব্যর্থ হয়েছিল। ২০২৪ সালে তারা ভোটকর্মীদের কেনার চেষ্টা করেছিল... একেক জনকে প্রায় পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা করে দিয়েছিল। কিন্তু বাংলার মানুষ তাদের দেখিয়েছে যে নেতা কেনা যায়, জনগণকে নয়।'
এদিকে তৃণমূল নেতার এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। দলের রাজ্য শাখার সভাপতি ও রাজ্যসভার সদস্য শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলাফল বিরোধীদের ঐক্যের অভাব তুলে ধরেছে। তিনি বলেন, 'আমি অভিষেকের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে তাঁকে বাড়তি দাম দিতে চাই না। কিন্তু এই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিয়েছে যে এনডিএ ঐক্যবদ্ধ, যেখানে বিরোধীরা বিভক্ত।'