চোখে কালো চশমা! পার্থর অব্যহতি খারিজ, পরেশ-সহ ২১ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন

3 hours ago 1

সদ্যই চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাই এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কালো চশমা পরেই আদালতে ভার্চুয়াল হাজিরা দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজিরা দেন তিনি। শুধু তিনিই নন, এদিন আদালতে হাজিরা দেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারী এবং তাঁর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীও। এসএসসি-র একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় পার্থ, অঙ্কিতা, পরেশ-সহ মোট ২১ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক বিশ্বরূপ শেঠ।

সিবিআইয়ের করা কোনও মামলায় এই প্রথমবার চার্জ গঠন হল। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হবে বিচারপ্রক্রিয়া।এদিন ভার্চুয়ালি আদালতে হাজিরা দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সদ্য চোখের অপারেশন হওয়ায় তাঁর চোখে ছিল কালো চশমা। বস্তুত, গত কয়েক মাস ধরেই শারীরিক অসুস্থতার কারণে বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন পার্থ। বুধবার তাঁর চোখে অস্ত্রোপচার হয়। সেই কারণেই চোখে কালো চশমা পরতে হয় তাঁকে।গত ৩ সেপ্টেম্বর নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় আলিপুরে সিবিআই বিশেষ আদালতে জামিন পেয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। তবে জামিন পেলেও জেলমুক্ত হননি পার্থ। প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত সিবিআইয়ের মামলাতেও অন্যতম অভিযুক্ত তিনি। তাই আপাতত জেলেই থাকতে হবে তাঁকে। বৃহস্পতিবার আদালত কক্ষে চার্জ গঠনের শুনানি চলাকালীন মামলা থেকে অব্যাহতি চান প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।ধোপে টেকেনি পরেশ, অঙ্কিতার যুক্তিও। তাঁরাও মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন। তাঁদেরও দাবি ছিল, তাঁরা নির্দোষ। অঙ্কিতা নিজের যোগ্যতাতেই চাকরি পেয়েছিলেন বলে দাবি করেন পিতা-কন্যার আইনজীবী।

আরও খবর-বিদ্যুতে বিপ্লব ঘটানো নেতাকেই প্রধানমন্ত্রী চাইছে নেপালের জেন জি'রা, তাঁরও আছে ভারত-যোগ

পার্থর আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী আদালতে সওয়াল করে বলেন, ‘সিবিআইয়ের চার্জশিট এবং এফআইআর-এ প্রথমে আমার মক্কেলের নাম ছিল না।' একইসঙ্গে সিবিআইয়ের দাবিও ভিত্তিহীন বলে খারিজ করে দেন তিনি। পাশাপাশি আদালতের কাছে ‘মুক্তি’ চেয়ে হাসপাতালের বিছানায় বসেই সওয়াল করেন পার্থ। তিনি বলেন, 'স্যর, আমি শিক্ষামন্ত্রী ছিলাম। আমি সম্পূর্ণভাবে নির্দোষ।’ এরপরেই বিচাপতি বলেন, 'অশোক সাহাকে চেয়ারম্যান, নিয়ম ভেঙে বিভিন্ন পদে নিয়োগ করেছিলেন। নকল নথিকে আসল হিসাবে দেখিয়েছেন।' জবাবে প্ৰাক্তন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'আমার সামাজিক সম্মান আছে। ২৫ বছর ধরে একটা অঞ্চল থেকে পাঁচ বার জিতেছি। আমি একটি জায়গায় নজরদারির দায়িত্বেও ছিলাম। এই ধরনের কাজ যারা করেছে, তারা মিডিয়ার মাধ্যমে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।' সেই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, 'আমায় মুক্তি দিন। সমাজের সামনে দাঁড়াতে দিন। জেলের অন্ধকারে রেখে আমায় সুযোগ দেওয়া হয়নি।আমি যাঁদের নিয়োগ করেছি বলে বলা হচ্ছে, তাঁদের আমি নিয়োগ করিনি। এসএসসি-ই নিয়োগ করত। অশোক সাহা আগে থেকেই ওখানে কাজ করতেন।আমি মন্ত্রী হওয়ার আগেই সুবীরেশ ভট্টাচার্য ওখানে চেয়ারম্যান ছিলেন। কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় আমি আসার আগেই ওখানে ছিলেন। যাঁরা অন্যায় করেছেন, তাঁদের কিছু হচ্ছে না। আমার দোষটা কোথায়? ওঁরা দোষ করলে আমি সরিয়ে দিতাম। কিন্তু সেটা নিয়মে নেই।'

আরও খবর-বিদ্যুতে বিপ্লব ঘটানো নেতাকেই প্রধানমন্ত্রী চাইছে নেপালের জেন জি'রা, তাঁরও আছে ভারত-যোগ

সবশেষে পার্থ অব্যহতি চাইলেও, তিনি তা পাননি। আর্জি খারিজ করে চার্জ তাঁকে যুক্ত করেছে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত।এর ফলে আগামী দিনে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার বিচার প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে।প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২২ সালের ২২ জুলাই পার্থের দক্ষিণ কলকাতার নাকতলার বাড়িতে অভিযান চালায় ইডি। দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পরবর্তী কালে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি-সহ একাধিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর। এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই-ও গ্রেফতার করে পার্থকে। সিবিআইয়ের প্রাথমিক নিয়োগ মামলাতেও নাম জড়ায় পার্থের। ২০২৪ সালের অক্টোবরে তাঁকে ওই মামলায় গ্রেফতার করে সিবিআই।

Read Entire Article