মুর্শিদাবাদে বিয়ে করে পাকাপাকিভাবে বসবাসের চেষ্টা, ধৃত বাংলাদেশি মহিলা

18 hours ago 5

মুর্শিদাবাদের এক যুবককে বিয়ে করে ভুয়ো পরিচয়ে ভারতে পাকাপাকিভাবে বসবাসের চেষ্টা করছিলেন বাংলাদেশের এক মহিলা। অবশেষে হিলি সীমান্তে বিএসএফের নজরে পড়ে ধরা পড়ল তাঁর জালিয়াতি। অভিযুক্ত মহিলার নাম রোজিনা বিবি, বাড়ি বাংলাদেশের জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানার আলাই এলাকায়। তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: কালীঘাটে ধৃত বাংলাদেশি কীভাবে পেলেন ‘খাঁটি ভারতীয়’ ড্রাইভিং লাইসেন্স?

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রোজিনা বিবির জীবনের কাহিনি রীতিমতো ঘোর লাগানো। ২০১৫ সালে তিনি সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে হাউসকিপিংয়ের কাজে যান। সেখান থেকে জর্ডনেও কাজ করেছিলেন কিছুদিন। জর্ডনে থাকাকালীনই পরিচয় হয় মুর্শিদাবাদের কান্দির বাসিন্দা লাটু শেখের সঙ্গে। সেখান থেকেই ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। পরে রোজিনা বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দালালের সাহায্যে হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন।

ভারতে প্রবেশ করার পর রোজিনা সরাসরি লাটু শেখের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন এবং তাঁকে বিয়ে করেন। এরপর আরও এক ধাপ এগিয়ে শ্বশুরের ভাইকে ‘বাবা’ পরিচয় দিয়ে আধার কার্ড, ভোটার কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি সংগ্রহ করেন। এর পর থেকেই তিনি অবাধে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাতায়াত শুরু করেন। গত সপ্তাহে আবারও তিনি দালালের মাধ্যমে বাংলাদেশে যান। সোমবার ফের হিলির চকগোপাল সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢোকার সময় বিএসএফের নজরে আসেন। নথি যাচাইয়ের সময় অসঙ্গতি ধরা পড়লে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরার মুখে রোজিনা নিজেই স্বীকার করে নেন পুরো জালিয়াতির ঘটনা। বিএসএফ তাকে হিলি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

রোজিনার কাছ থেকে বাংলাদেশের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাসবুকসহ একাধিক নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি তাঁর বয়স নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে, রোজিনার বাংলাদেশের বাড়িতে ১৫ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। অর্থাৎ, ভারতে নতুন করে সংসার গড়লেও বাংলাদেশে তাঁর প্রথম সংসার এখনও টিকে আছে। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তাঁকে কেবল জাল নথি প্রস্তুতের অভিযোগেই অভিযুক্ত করা হয়নি, একই সঙ্গে তিনি কোনও আন্তর্জাতিক চক্র বা স্লিপার সেলের সঙ্গে যুক্ত আছেন কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের ডিএসপি (সদর) বিক্রম প্রসাদ জানিয়েছেন, বিএসএফ রোজিনাকে হিলি থানার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। এখন তদন্ত এগোচ্ছে একাধিক দিক ধরে। মঙ্গলবার রোজিনাকে বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। সরকারি আইনজীবী শিবাজী সিংহ রায় বলেন, তদন্তে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Read Entire Article